আগামী অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংকে গচ্ছিত ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত স্থিতির ওপর আবগারি শুল্ক (Excise Duty) মওকুফের প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বর্তমানে যেখানে ১ লাখ টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে থাকলেই ১৫০ টাকা আবগারি শুল্ক কাটা হয়, সেখানে নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী এই শুল্ক কাটা শুরু হবে ৩ লাখ টাকা অতিক্রমের পর।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, "জনসাধারণকে কিছুটা স্বস্তি দেওয়ার জন্য কিছু ক্ষেত্রে ভ্যাট ও আবগারি শুল্কে ছাড় দেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবেই ১ লাখ টাকার পরিবর্তে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যাংক স্থিতির ওপর শুল্ক কাটা হবে না।"
বর্তমানে ব্যাংকে বার্ষিক স্থিতির ভিত্তিতে নিচের হারে আবগারি শুল্ক কাটা হয় এবং তা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সরকারকে পরিশোধ করে:
১ লাখ–৫ লাখ টাকা: ১৫০ টাকা
৫ লাখ–১০ লাখ টাকা: ৫০০ টাকা
১০ লাখ–৫০ লাখ টাকা: ৩,০০০ টাকা
৫০ লাখ–১ কোটি টাকা: ৫,০০০ টাকা
১ কোটি–২ কোটি টাকা: ১০,০০০ টাকা
২ কোটি–৫ কোটি টাকা: ২০,০০০ টাকা
৫ কোটির বেশি: ৫০,০০০ টাকা
অর্থাৎ প্রস্তাবিত ছাড় বাস্তবায়িত হলে ৩ লাখ টাকার নিচে যাদের বার্ষিক গড় স্থিতি রয়েছে, তাদের কাছ থেকে আর কোনো আবগারি শুল্ক কাটা হবে না।
এটি শুধু আমানতের ওপরই নয়—ঋণ হিসাব, চলতি হিসাব, ইনস্টলমেন্ট হিসাব বা যে কোনো ধরনের অ্যাকাউন্টে গচ্ছিত অর্থের পরিমাণের ওপরও প্রযোজ্য। অর্থাৎ একাধিক হিসাব থাকলেও সম্মিলিত গড় স্থিতি যদি নির্ধারিত সীমা ছাড়ায়, তবে শুল্ক প্রযোজ্য হবে।
আবগারি শুল্কের পাশাপাশি ব্যাংকে রাখা আমানত থেকে অর্জিত মুনাফার ওপরও কর দিতে হয়। যাদের টিআইএন (Tax Identification Number) রয়েছে, তাদের জন্য করহার ১০% এবং যাদের নেই, তাদের জন্য ১৫%। পাশাপাশি ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের কাছ থেকে সার্ভিস চার্জ ও অন্যান্য ফি কেটে রাখে।
বিশ্লেষকদের মতে, প্রস্তাবিত এই পরিবর্তন সাধারণ ও সীমিত আয়ের গ্রাহকদের জন্য ইতিবাচক বার্তা বহন করে। বিশেষ করে যারা সামান্য কিছু সঞ্চয় ব্যাংকে রাখেন, তাদের ওপর সরাসরি করের বোঝা কিছুটা হলেও হালকা হবে।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?