জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে গুলি চালানোর ঘটনায় হত্যা মামলাসহ অন্তত ১৪টি মামলার আসামি সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা সাইদুর রহমান সুজন (৪৫) কারাবন্দি অবস্থায় আত্মহত্যা করেছেন। রোববার (১৫ জুন) সকালে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন বলে কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. ফারুক সাইদুর রহমানের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কারা মহাপরিদর্শক সৈয়দ মোতাহের হোসেন জানান, সুজন কারাগারের সূর্যমুখী ভবনের একটি কক্ষে আরও দুই বন্দির সঙ্গে থাকতেন। রোববার সকালে তিনি নাস্তা করার পর, এক বন্দি আদালতে হাজিরা দিতে বের হন, অন্যজন তখন ঘুমাচ্ছিলেন। এ সময় সুজন নিজের গামছা ব্যবহার করে জানালার গ্রিলে গলায় ফাঁস দেন। দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে কারা হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং পরে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হলেও শেষ রক্ষা হয়নি।
গত ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সুজনকে গ্রেপ্তার করে। রাতেই তাঁকে সাভার থানায় হস্তান্তর করা হয়। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় এই নেতা বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়কার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়, যেখানে সাভারে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালাতে দেখা যায় সুজনকে। ভিডিওতে তার হাতে একটি পিস্তলও দেখা যায়। পট পরিবর্তনের পর তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ সহিংসতার অভিযোগে অন্তত ১৪টি মামলা দায়ের করা হয়। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেও একটি মামলায় তার বিচার চলছিল।
সুজনের মৃত্যু নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন তার আইনজীবী ও পরিবার। তারা দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন। এদিকে কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, আত্মহত্যার কারণ অনুসন্ধানে ইতিমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সুজনের মৃত্যুতে কারাগারের নিরাপত্তা ও নজরদারির প্রশ্নও নতুন করে সামনে এসেছে।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?