ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা, গর্ভপাত করাতে গিয়ে মৃত্যু; জামালপুরে গ্রেপ্তার এক অভিযুক্ত

জামালপুরে এক প্রবাসীর স্ত্রী ধর্ষণের পর গর্ভপাত করাতে গিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা গেছেন। এ ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মো. জাহাঙ্গীর আলমকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। নিহত নারী বুলি বেগম (৩৫) তিন সন্তানের জননী। তার স্বামী মো. মুগল মিয়া দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে কর্মরত। এই সুযোগে একই এলাকার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম ২০২৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতে কৌশলে তার ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। এতে নারীটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।

পরবর্তীতে, গত ১৯ মার্চ জাহাঙ্গীরের চাপেই গর্ভপাত করাতে বাধ্য হন তিনি। গোপনে এই গর্ভপাত করানোর সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। পরে জামালপুর ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ এপ্রিল মৃত্যু হয় তাঁর।

এ ঘটনায় নিহত নারীর বাবা আবু বকর দুদু বাদী হয়ে জামালপুর থানায় একটি ধর্ষণ ও অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভপাত সংক্রান্ত মামলা দায়ের করেন।

জামালপুর জেলা ডিবির অফিসার ইনচার্জ মো. নাজমুস সাকিব জানান, তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মেলে। এরপর অভিযান চালিয়ে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার বালুবাড়ি এলাকা থেকে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জামালপুরের পুলিশ সুপার সৈয়দ রফিকুল ইসলাম বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক ও আমাদের বিবেককে নাড়া দিয়েছে। অভিযুক্তকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে এবং এই নৃশংস অপরাধে তার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।”

এ ঘটনায় সমাজে নারী নিরাপত্তা ও প্রবাসীদের পরিবারের দুর্বল অবস্থান নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, প্রবাসে স্বামী থাকার কারণে অনেক নারী পরিবার ও সমাজের পর্যাপ্ত সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হন, যা অপরাধীদের সুযোগ সৃষ্টি করে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আশ্বাস দিয়েছে, এ ধরনের ঘটনায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না এবং নারী নির্যাতন রোধে তারা আরও কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে।