ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে সরাসরি হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ। তিনি বলেছেন, খামেনির পরিণতিও হতে পারে ইরাকের সাবেক স্বৈরশাসক সাদ্দাম হোসেনের মতো, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনের পর ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ফাঁসিতে মৃত্যুবরণ করেন।
মঙ্গলবার (১১ জুন) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে আসে। তাতে বলা হয়, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্থানীয় গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমি ইরানি স্বৈরাচারীকে সতর্ক করে দিচ্ছি— ইসরায়েলি বেসামরিক জনগণের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও যুদ্ধাপরাধ চালিয়ে যাওয়ার পরিণাম ভয়াবহ হবে।”
উল্লেখ্য, সাদ্দাম হোসেন ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনীর ইরাক আক্রমণের পর ক্ষমতাচ্যুত হন এবং ২০০৬ সালে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
কাটজ তার হুঁশিয়ারিতে খোলাখুলি বলেন “খামেনির মনে রাখা উচিত— ইরানের প্রতিবেশী এক স্বৈরশাসক (সাদ্দাম) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে একই ধরণের যুদ্ধকৌশল গ্রহণ করে কী পরিণতির মুখোমুখি হয়েছিল।” তিনি আরও জানান, ইসরায়েল তাদের নিরাপত্তা রক্ষায় প্রয়োজন হলে “তেহরানের শাসকগোষ্ঠী ও সামরিক অবকাঠামোর ওপর অভিযান চালাতে দ্বিধা করবে না।”
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্য শুধু হুমকি নয়, বরং তা স্ট্র্যাটেজিক ডিটারেন্স বা কৌশলগত প্রতিরোধ নীতির অংশ বলেই প্রতীয়মান হয়। এমন মন্তব্য যুদ্ধপরিস্থিতিতে মনস্তাত্ত্বিক চাপ তৈরির একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়, বিশেষত যখন একটি রাষ্ট্র তার নিজস্ব নিরাপত্তার প্রশ্নে অগ্রিম সামরিক কৌশল তুলে ধরে।
এই বক্তব্য এমন এক সময়ে এল যখন ইরান-ইসরায়েল সম্পর্ক চরম উত্তেজনার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সিরিয়ায় ইরানপন্থী মিলিশিয়াদের ঘাঁটিতে ইসরায়েলের বিমান হামলা, লেবাননের হিজবুল্লাহকে কেন্দ্র করে উত্তরের ফ্রন্টে টানাপোড়েন এবং সর্বশেষ ইরান থেকে ইসরায়েলের দিকে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার ঘটনার পটভূমিতে উভয় পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরণের বক্তব্য যুদ্ধ সম্ভাবনার মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে। একইসাথে এটি আন্তর্জাতিক মহলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীনের ভূমিকাকেও নতুন করে গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে বাধ্য করবে।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?