clock ,

তাইওয়ানে চীনের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে সাবেক চার সরকারি কর্মকর্তা অভিযুক্ত

তাইওয়ানে চীনের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে সাবেক চার সরকারি কর্মকর্তা অভিযুক্ত

তাইওয়ানে চীনের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টির (ডিপিপি) সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চার সাবেক সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করেছে দেশটির প্রসিকিউশন বিভাগ। অভিযোগে বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা দীর্ঘ সময় ধরে রাষ্ট্রের গোপন সংবেদনশীল কূটনৈতিক তথ্য চীনের সঙ্গে ভাগাভাগি করেছেন, যা তাইওয়ানের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

এই চারজনের মধ্যে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তের সাবেক এক ঘনিষ্ঠ সহকারী এবং জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তা জোসেফ -এর সাবেক একজন সিনিয়র স্টাফার। এদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ, গুপ্তচরবৃত্তি এবং অর্থপাচারের মতো গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রসিকিউশন কর্তৃপক্ষ। খবরটি প্রথম প্রকাশ করে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।

প্রসিকিউটরদের বিবরণ অনুযায়ী, অভিযুক্তদের একজন পূর্বে তাইপে সিটি কাউন্সিলরের অধীনে কাজ করতেন এবং তিনি চীনের কাছে তথ্য পাঠাতে একটি নির্দিষ্ট এনক্রিপটেড বার্তা আদান-প্রদানের অ্যাপ ব্যবহার করতেন। চীন সরকারের পক্ষ থেকে এসব তথ্যের বিনিময়ে অভিযুক্তরা প্রত্যেকে লাখ ৬০ হাজার থেকে লাখ ৬০ হাজার তাইওয়ানি ডলার (প্রায় হাজার থেকে ২১ হাজার মার্কিন ডলার) পর্যন্ত অর্থ গ্রহণ করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে চীনের কাছ থেকে পাওয়া এই অর্থ অবৈধভাবে লেনদেন পাচারের অভিযোগও তোলা হয়েছে।

প্রসিকিউশন বিভাগ অভিযুক্তদের জন্য পাঁচ বছর থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১৮ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং অবৈধভাবে অর্জিত মোট ৮৩ লাখ তাইওয়ানি ডলার (প্রায় লাখ ৭৭ হাজার মার্কিন ডলার) বাজেয়াপ্ত করার আবেদন জানিয়েছে আদালতের কাছে।

চার অভিযুক্তের মধ্যে দুজন আদালতের কাছে তাদের দোষ স্বীকার করেছেন। তবে জোসেফ - সাবেক সহকারীসহ বাকি দুজন এখনো অভিযোগ অস্বীকার করে যাচ্ছেন। তদন্ত এখনো চলমান রয়েছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলার শুনানি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রসিকিউটররা।

উল্লেখ্য, গত কয়েক বছরে তাইওয়ানে গুপ্তচরবৃত্তি এবং চীনের হস্তক্ষেপ সংক্রান্ত উদ্বেগ বেড়েই চলেছে। ২০২৪ সালেই এমন অভিযোগে মোট ৬৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, যা ২০২২ ২০২৩ সালের সম্মিলিত সংখ্যার চেয়েও বেশি। এই অভিযুক্তদের অধিকাংশই সামরিক বাহিনীর সাবেক বা বর্তমান সদস্য।

চলতি বছরের মার্চ মাসে প্রেসিডেন্ট অফিসে কর্মরত নিরাপত্তা দলের তিন সদস্যসহ চার সেনাসদস্যকে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, এসব মামলার বেশিরভাগেই অভিযোগ ছিল তারা চীনের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছে রাষ্ট্রীয় তথ্য পাচার করেছেন।

এদিকে, তাইওয়ানের প্রধান বিরোধী দল কুওমিনটাং (কেএমটি) পার্টির কয়েকজন কর্মীও অনুরূপ অভিযোগের তদন্তের আওতায় রয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো। এতে স্পষ্ট যে, দেশটির রাজনীতি প্রশাসনের ভেতরে চীনের প্রভাব বিস্তার এবং গুপ্তচরবৃত্তির ঝুঁকি এখন একটি বড় জাতীয় নিরাপত্তা সংকটে রূপ নিচ্ছে।

তাইওয়ানের সরকার ইতোমধ্যে গুপ্তচরবৃত্তি প্রতিরোধে আরও কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের অঙ্গীকার করেছে এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা তদারকি জোরদার করেছে।

 

You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?

আমাদের অনুসরণ করুন

জনপ্রিয় বিভাগ

সাম্প্রতিক মন্তব্য