ইরানে চলমান ইসরায়েলি হামলায় যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িয়ে পড়লে গোটা মধ্যপ্রাচ্য "নরকে" পরিণত হবে—এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সাঈদ খতিবজাদে।
বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “এটা আমেরিকার যুদ্ধ নয়। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি এতে জড়ান, তাহলে ইতিহাস তাঁকে মনে রাখবে এমন একজন হিসেবে যিনি একটি যুদ্ধে জড়ালেন, যেটা তাঁর ছিল না।”
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা এই সংঘাতকে আরও জটিল করে তুলবে। এতে করে আগ্রাসন ও নৃশংসতা অব্যাহত থাকবে এবং নিরীহ মানুষের দুর্ভোগ দীর্ঘায়িত হবে।
কূটনীতি চাই, আগ্রাসন নয়
সাঈদ খতিবজাদে বলেন, “ইরান কূটনীতি চায়,
কিন্তু যখন আমাদের শহরগুলোয়
বোমাবর্ষণ চলবে, তখন কেউ আলোচনায়
বসবে না। একমাত্র আগ্রাসন
বন্ধ হলেই সংলাপ সম্ভব।”
তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার প্রস্তুতি চলছিল এবং একটি চুক্তির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানো গিয়েছিল। কিন্তু ইসরায়েলের হঠাৎ হামলায় সেই সম্ভাবনা ধ্বংস হয়ে গেছে।
হোয়াইট হাউসের অবস্থান
এদিকে ওয়াশিংটন থেকে জানানো হয়েছে,
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আপাতত সামরিক পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত স্থগিত রেখেছেন। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন ল্যাভিট বলেন, “কূটনৈতিক প্রচেষ্টার জন্য আরও দুই
সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে।”
তিনি বলেন, “যেকোনো আলোচনায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ রাখার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্ট করেছেন, ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের সুযোগ দেওয়া হবে না।”
ইসরায়েলি হামলায় নিহত প্রায় ৬০০
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী, গত
১৩ জুন ইসরায়েলের হামলা
শুরুর পর থেকে ইরানে
অন্তত ৫৮৫ জন নিহত
হয়েছেন। এর মধ্যে ১২৬
জন সামরিক ও ২৩৯ জন
বেসামরিক নাগরিক।
তেহরান ও অন্যান্য শহরে বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১ হাজার ৩২৬ জন।
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য বলছে, এখন পর্যন্ত ২২৪ জন নিহত এবং ১ হাজার ২৭৭ জন আহত হয়েছেন। তবে ইরান সরকার নিয়মিতভাবে হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করছে না।
এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহল গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং উত্তেজনা কমাতে দ্রুত আলোচনায় ফেরার আহ্বান জানিয়েছে।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?