ভারতের কাশ্মির অঞ্চলের পেহেলগামে ভয়াবহ হামলার পর উপত্যকাজুড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক অভিযান চলছে। পেহেলগাম সংলগ্ন বাইসারান ভ্যালিতে পর্যটকদের ওপর হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হওয়ার পর কাশ্মিরের বিভিন্ন স্থানে সন্দেহভাজনদের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও পুলিশ আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো বিবৃতি দেয়নি।
বিবিসি হিন্দির তথ্য অনুযায়ী, কমপক্ষে ১০টি বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে। সন্দেহভাজন হিসেবে প্রকাশিত স্কেচে থাকা আদিল হোসেন ঠোকারের পরিবারের দাবি, তাদের বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে এবং পরিবারের সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে আদিলের মা জানিয়েছেন, তার ছেলে ২০১৮ সাল থেকে নিখোঁজ।
কাশ্মিরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আবদুল্লাহ উভয়েই উগ্রবাদ দমনে নিরীহ সাধারণ নাগরিকদের হয়রানি না করার ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। তারা দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানানোর পাশাপাশি নিরীহ মানুষের মানবাধিকার রক্ষার ওপর জোর দিয়েছেন।
এদিকে, হামলার জন্য পাকিস্তানের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলা এবং নদীর প্রবাহ বন্ধ করার হুমকির কারণে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, অভ্যন্তরীণ চাপের মুখে থাকলেও ভারত সরাসরি বড় ধরনের সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে এখনো দ্বিধায় রয়েছে। কারণ দেশটির বিশাল সামরিক বাহিনী আধুনিকায়নের পথে থাকলেও এখনো বহু পুরনো সরঞ্জামের ওপর নির্ভরশীল।
২০১৮ সালের একটি সংসদীয় প্রতিবেদনে ভারতের ৬৮ শতাংশ সামরিক সরঞ্জামকে ‘সেকেলে’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। সাম্প্রতিক কিছু উন্নয়ন সত্ত্বেও এই পরিস্থিতির তেমন একটা পরিবর্তন হয়নি। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভারতের সম্ভাব্য পদক্ষেপ হতে পারে সীমিত পরিসরের প্রতিশোধমূলক হামলা, যা অভ্যন্তরীণ চাপ সামাল দেওয়ার পাশাপাশি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের ঝুঁকিও কম রাখবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্ভাব্য দুই ফ্রন্টে যুদ্ধের আশঙ্কার কারণে ভারত বর্তমানে আরও বেশি সতর্ক। ফলে সামরিক সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কৌশলগতভাবে সংযমী থাকার প্রবণতা দেখা যেতে পারে।
You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?