clock ,

সিঙ্গাপুরে জাতিগত ও ধর্মীয় সম্প্রীতি কঠোর পরিশ্রমের ফল: প্রধানমন্ত্রী ওয়াঙ

সিঙ্গাপুরে জাতিগত ও ধর্মীয় সম্প্রীতি কঠোর পরিশ্রমের ফল: প্রধানমন্ত্রী ওয়াঙ

সিঙ্গাপুরে বিদ্যমান জাতিগত ধর্মীয় সম্প্রীতি কোনোভাবে আপনা-আপনি অর্জিত হয়নি, বরং এটি গড়ে উঠেছে ধারাবাহিক কঠোর পরিশ্রম এবং সচেতন প্রয়াসের মাধ্যমে বিশেষ করে ধর্মীয় নেতাদের অবদান এই ক্ষেত্রে অনস্বীকার্য। গত মে বৈশাখী পূর্ণিমা উদযাপন উপলক্ষ্যে সিঙ্গাপুর এক্সপোতে সিঙ্গাপুর বুদ্ধিষ্ট ফেডারেশন (এসবিএফ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওয়াঙ বলেন, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে যে সম্প্রীতি দেখা যায়, তাকে লালন রক্ষা করার ক্ষেত্রে প্রত্যেকেরই ভূমিকা রয়েছে। বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান জাতিগত ধর্মীয় উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের অনেক জায়গায় ধর্মীয় জাতিগত উত্তেজনা বাড়ছে। বিভাজন, উগ্রতা এবং অসহিষ্ণুতার প্রবণতা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। কিন্তু সিঙ্গাপুরে আমরা এখনও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখতে পেরেছিএটা আমাদের জন্য গর্বের। এই সম্প্রীতির পরিবেশ ধরে রাখা সহজ বিষয় নয়। এটা রক্ষা করতে আমাদের সবাইকে, বিশেষ করে ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলোর নেতাদের, প্রতিনিয়ত সচেতন থাকতে হয়।

প্রধানমন্ত্রী জানান, সিঙ্গাপুর বিশ্বের অন্যতম ধর্মীয় বৈচিত্র্যময় দেশ। আমাদের দেশে এমন অনেক জায়গা আছে, যেখানে একই রাস্তায় পাশাপাশি মন্দির, গির্জা মসজিদ দেখা যায়। এটাই আমাদের সমাজের শক্তি এবং এই ঐক্যই আমাদের পরিচয়। দেশের প্রত্যেক নাগরিকের দায়িত্ব হলো এই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পরিবেশকে সম্মান করা এবং রক্ষা করা। সম্প্রীতি ধরে রাখা শুধু সরকারের কাজ নয়, বরং এটি আমাদের সবার সম্মিলিত দায়িত্ব। বিশ্বব্যাপী যখন ধর্ম জাতিগত বিভাজন গভীর হচ্ছে, তখন সিঙ্গাপুরের এই ঐক্যের মডেলকে আন্তর্জাতিক পরিসরেও দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, এই বৈচিত্র্যের মাঝেও আমরা গভীর সম্প্রীতি উপভোগ করি। সকল ধর্মের সিঙ্গাপুরের নাগরিকরা একসাথে বসবাস করে, একসাথে খায় এবং একে অপরের উৎসবে অংশগ্রহণ করে। আমাদের বিশ্বাস এবং আচার-অনুষ্ঠান ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু আমরা একই পাড়ায় একসাথে খাবার ভাগ করে নিতে, বন্ধুত্ব স্থাপন করতে এবং বেড়ে উঠতে পেরে খুশি।

প্রধানমন্ত্রী ওয়াঙ তাঁর বক্তব্যে সিঙ্গাপুর বুদ্ধিষ্ট ফেডারেশনের (এসবিএফ) অবদানের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করে বলেন, এসবিএফ জাতিগত ধর্মীয় সম্প্রীতির জন্য গঠিত জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য হিসেবে সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে। এছাড়া, এসবিএফ সিঙ্গাপুরের ইন্টার-রিলিজিয়াস অর্গানাইজেশন বা আন্তঃধর্মীয় সংস্থার সদস্য, যা বিভিন্ন ধর্মীয় নেতাদের সমন্বয়ে পরিচালিত একটি বেসরকারি উদ্যোগএর মূল লক্ষ্য ধর্মীয় সম্প্রীতির পক্ষে কাজ করা। এই সব সংগঠনের সক্রিয়তা আন্তরিকতা সিঙ্গাপুরকে একটি শান্তিপূর্ণ, বহুধর্মীয় সহাবস্থানের সফল উদাহরণ হিসেবে গড়ে তুলেছে। এই প্ল্যাটফর্মগুলোর মাধ্যমে, বৌদ্ধ নেতারা অন্যান্য ধর্মীয় নেতাদের সাথে দৃঢ় বন্ধন বিশ্বাস গড়ে তুলতে সাহায্য করেছেন সহানুভূতি, পারস্পরিক সম্মান বোঝাপড়ার মাধ্যমে উদ্ভূত সমস্যাগুলি নীরবে সমাধান করেছেন। বিশেষ করে ২০২৪ সালে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্যহারমনি ইন অ্যাকশনতহবিল সংগ্রহ করেছে এবং রমজান মাসে মুসলমানদের চাল উপহার দিয়েছে। তিনি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আরও বলেন, আমাদের বৃহত্তম ধর্মীয় গোষ্ঠী হিসেবে, আপনারা সহিষ্ণুতা, অন্তর্ভুক্তিকরণ এবং সম্মানের জায়গা তৈরি করেছেন। এবং আপনারা তা শুধু কথায় নয়, কাজের মাধ্যমেও করেছেন।

১২ মে অনুষ্ঠিত বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপনের প্রাক্কালে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মহা বোধি স্কুলের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে গুজেং পরিবেশনা, প্রিন্স সিদ্ধার্থ চাইল্ড কেয়ার সেন্টারের শিশুদের নৃত্য এবং এসবিএফ-এর পৃষ্ঠপোষক স্পন্সরদের প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বরূপ স্মারক প্রদান এবং একটি বাজারের আয়োজনও করা হয়। 

You Must be Registered Or Logged in To Comment লগ ইন করুন?

আমাদের অনুসরণ করুন

জনপ্রিয় বিভাগ

সাম্প্রতিক মন্তব্য